দিবর দিঘী , নওগাঁ



স্থান :নওগাঁ জেলা পত্নীতলা উপজেলা দিবর  ইউনিয়নে- নওগাঁ সাপাহার রাসত্মার উত্তর পার্শ্বে ২ কি:মি দূরে অবস্থিত। দিঘীর পাড়সহ পরিমাণ ১৯,২৪ একর।

                                                                                    




কিভাবে যাওয়া যায়:
দেশের সব জায়গা থেকে  নওগাঁ সদর আসা যায়। এরপর বাস টার্মিনাল থেকে সাপাহারের  বাসে উঠে দিবর দিঘী  মোড়ে নামতে হবে। নওগাঁ থেকে দিবর দিঘী দূরত্ব ৫৫ কিলোমিটার।  বাসে চেপে গেলে সময় লাগবে দেড় থেকে দুই ঘন্টা। ঢাকা থেকে সরাসরি দিবর দিঘী আসতে পারেন। প্রতিদিন ঢাকা থেকে রকি এন্টারপ্রাইজ, হানিফ এন্টারপ্রাইজ একাধিকবার সাপাহার পর্যন্ত চলাচল করে। সাপাহার  এসে ভ্যান বা রিক্সাযোগে দিবর দিঘী যেতে পারেন। ভাড়া জনপতি দিয়ে ১০ টাকা।
                                                                 



দিবর দিঘী ইতিহাস :
পত্নীতলা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা (দিবর দিঘী ও দিবর দীঘিতে অবস্থিত দিব্যক জয়স্হম্ভ রয়েছে। নওগাঁ জেলার একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন পত্নীতলা উপজেলার দিঘীর মধ্যে স্থানে অবস্থিত দিব্যক জয়স্হম্ভ। এ দিঘী স্থানীয় জনগণের কাছে কর্মকারের জলাশয় নামে পরিচিত। দিঘীটির  জলাশয়ের আয়তন প্রায়  ৬০ বিঘা জমির উপরে অবস্থিত।  দীঘির মধ্যখানি অবস্থিত আট কোন বিশিষ্ট গ্রানাইট পাথরে এক বড় স্তম্ভ বাংলাদেশে বিরল। এই স্তম্ভের উচ্চতা ৩১ ফুট ৮ ইঞ্চি। পরিদর্শনের সময়ে মাপ অনুসারী পানি নিচের অংশ ৬ ফুট  ৩ ইঞ্চি এবং পানির উপরের অংশ ২৫ ফুট ৫ ইঞ্চি। এর ব্যাস ১০ ফুট ৪ ইঞ্চি ; প্রতিটি কোণের পরিধি ১ ফুট ৩.৫ ইঞ্চি। এই স্তম্ভের কোন লিপি নেই।  স্তম্ভের উপরিভাগে খাজঁ কাটা অলঙ্করণ দ্বারা সুশোভিত।
          দিবর দিঘী মধ্যস্থিত জয়স্তম্ভ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনটি পৃথক বিবরণ পাওয়া যায়।

দ্বিতীয় মহি পালকে পরাজিত ও হত্যা করার সাফল্যকে স্মরণীয় করার উদ্দেশ্যে দিব্যক ও জয় স্তম্ভ  নির্মাণ করান। দিনেশ চন্দ্র সেন  বৃহৎ বঙ্গে উল্লেখ করেছেন কৈবর্ত রাজ ভীমের খুলস্ন পিতামহত দিবেবাক দ্বিতীয় মহিপালকে যুদ্ধে পরাজিত ও নিহত করে বিজয় উল্লাসে যে স্তম্ভ উত্থাপিত করেছিলেন তা এখনো রাজশাহী জেলার এক দিঘী উপরে মসত্নক  উত্তোলন করে বিদ্যামান।

দিব্যাকের রাজত্বকালের পাল যুবরাজ রামপাল বরেন্দ্র উদ্ধারের চেষ্টা করে দিব্যাকের নিকট পরাজিত হন। দিব্যাক এই সাফল্যের স্মৃতি উদ্দেশ্যে দিঘীর মধ্য স্থিত এই স্তম্ভটি নির্মাণ করেন।  সন্ধ্যাকর নন্দীর রামচরিতের পরিচিত পর্বে অনুবাদ বিজয় স্তম্ভটি নির্মাণের কারণ সম্পর্কে নির্মিত লিখিত বিবরণ লিপিবদ্ধ করেছেন পূর্ববঙ্গের ঘোষ বর্মার তাম্র শাসন হইতে জানা দিব্যের বীরত্ব খ্যাতি উপমার বিষয় ছিল।  অত্যল্পাকালেই বরেন্দ্রী দিব্যের রণাধীন থাকে। পূর্বোদ্ধৃত মনহলি লিপির (১৪শ শেস্নাক ও রামচরিতের ১/২৯ শেস্নাম) একত্রে পাঠ করিলে জানা যায় দিব্যের রাজত্বকালের রামপাল (১০৮২-১১২৪) একবার পিত্তরাজ্য উদ্ধারে সশ্রেষ্ঠ হওয়ার ব্যর্থতা হন। ভীম এই স্তম্ভটি নির্মাণ করেন এবং দিব্যকের স্মৃতি স্তম্ভটি তার নামে উৎসর্গ করে। প্রফেসর শিরিন আখতারের বিবরণের তা সমর্থন পাওয়া যায়।

কোথায় রান্না করবেন;
দিঘীর আশেপাশে কিছু নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে ওখানে রান্না করার জন্য নির্দিষ্ট ভাবে চুলা ভাড়ায় পাওয়া যায়। দিঘী ভিউ পাওয়ার জন্য চার সাইডে মোটরসাইকেল চালানো সম্ভব।  দিঘিতে বসে থাকার জন্য নির্দিষ্ট নির্দিষ্ট স্থানে যাত্রী ছাউনি রয়েছে।
                                                                
কোথায় থাকবেন ;
সাপাহারে কিছু আবাসিক হোটেল তবে এগুলো যদি আপনার মনে না ধরে সে ক্ষেত্রে কষ্ট করে নওগাঁ সদরে এলে আপনি ভাল আবাসিক হোটেল পাবেন। তবে আগের তুলনায় বর্তমানে সাপাহারে ভালো মানের আবাসিক হোটেল স্থাপিত হয়েছে। আপনারা চাইলে সেখানে থাকতে পারেন। এখানে থাকার জন্য ৫০০ থেকে ১৫০০ মধ্যে রুম পাবেন। এসি রুম আছে  সেক্ষেত্রে বাজেট বাড়াতে হবে। আর খাওয়ার জন্য ভালো মানের দেশি খাবার সমৃদ্ধ  হোটেল রয়েছে। এছাড়া রয়েছে কালাই রুটি এবং বিখ্যাত বিখ্যাত আম।                                          




লেখকের শেষ কথা :
আপনারা যারা দিবর দিঘী ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন আশা করছি আজকে আর্টিকেলটি পরে তারা অনেক উপকৃত হবেন। আজকে আর্টিকেল পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন। আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না কারণ তারাও দিবর দিঘী ভ্রমণের জন্য যেতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

তৌহিদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url