প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করব সূরা ইয়াসিন ৪১ বার পড়ার ফজিলত এবং সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত। সূরা ইয়াসিন আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা জানতে পারবো। আপনারা যারা সূরা ইয়াসিন ৪১ বার পড়ার ফজিলত এবং সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য।
আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন সূরা ইয়াসিন ৪১ বার পাঠের ফজিলত এবং সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে পারবেন।, আপনারা অনেকে হয়তো এই বিষয়টি সম্পর্কে জানেন না,আশা করি আজকের আর্টিকেলটা পড়লে আপনারা অনেক কিছু জানতে এবং বুঝতে পারবেন । তাই মনোযোগ দিয়ে আজকের আর্টিকেলটি পড়ুন।
সূরা ইয়াসিন
সূরা ইয়াসিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। আমরা অনেকেই জানিনা ইয়াসিন সূরা টা কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ এটা পড়লে আমাদের কতটা উপকার হয়ে থাকে সূরা ইয়াসিন পবিত্র কোরানের ৩৬ তম সূরা। সূরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ রুকু পাঁচটি ও আয়াত হচ্ছে ৮৩ টি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ এই সূরাকে পবিত্র কোরানের হৃদপিণ্ড বলে বর্ণনা করেছেন। সূরা ইয়াসিনে আল্লাহর একত্ব ও মহানবী সাল্লাল্লাহু সালামের রিসালাত সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
সূরা ইয়াসিন পাঠকারির জন্য জান্নাতের আটটি দরজা উন্মুক্ত থাকবে। আমরা মৃত ব্যক্তির শান্তির জন্য এই সূরা পাঠ করে থাকি। এছাড়া রোদ তাপ বিপদ আপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা এই সূরা পাঠ করে পারি। এছাড়া ইয়াসিন সূরা আমরা পাঠ করলে আমাদের জীবনের নানা ধরনের সমস্যা দূর করে হয়ে থাকে। শান্তিপূর্ণ মৃত্যুর জন্য এই সূরাটি অনেকে গুরুত্বপূর্ণ। সূরা ইয়াসিন আমল করার মধ্যে রয়েছে প্রকৃত পূর্ণ। আল্লাহর অস্তিত্ব একত্র এবং সৃষ্টির বিষয় কুরআনে উল্লেখ রয়েছে
বৃষ্টি ঝরে মাটিকে সতেজ রাখা দিনরাত ও চন্দ্র সূর্যের অবস্থিত সমুদ্রের চলাচলর তো জাহাজ ও নৌকায় ইত্যাদি জাগতিক সচলতা হিসেবে আল্লাহ যেসব নিয়ামত দিয়েছেন তার বিবরণ এই সূরাতে রয়েছে। এই সূরার বিষয়বস্তু মৃত্যুর পর পুনরুত্থান। সূরা ইয়াসিন এ বলা হয়েছে , ’আমি মৃতকে জীবিত করি আর লিখে রাখি ওরা যা পাঠায় ও ওদের যে পায়ের চিহ্ন রেখে যায়। এক সুস্পষ্ট গ্রন্থে আমি সব সংরক্ষণ করে রেখেছি ’।আপনারা হয়তো উপরে আর্টিকেল থেকে বুঝতে পারছেন ইয়াসিন সূরা কি এবং তার গুরুত্ব কতটুকু।
সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত
সূরা ইয়াসিন কোরআনের মক্কি সূরাগুলোর মধ্যে একটি এবং এর আয়াত সংখ্যা ৮৩টি। এটি একটি দুর্দান্ত চোরা যা পুনরুত্থানের বিষয় আলোকপাত করে এবং এটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে ব্যাখ্যা করেছে।এই সূরাটি ব্যক্তি জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।আমরা হয়তো অনেকে সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত সম্পর্কে জানি না, এ আয়াত পাঠের মধ্যে আমাদের কতটা উপকারী তা আমরা অনেকেই জানিনা।
সূরা ইয়াসিন মক্কার সূরা গুলির মতো দেবত্ব ও দেবত্বের একই করণ এবং যারা এতে বিশ্বাস করে না তাদের আজাব প্রশংসার ব্যাখ্যা করেছেন।।সূরা ইয়াসিন একটি গোপন বিষয় রয়েছে যেই ইয়াসিন পাঠ করবে তার জন্য সওয়াব। বাকি সূরাগুলোর মধ্য থেকে সূরা ইয়াসিনের একটি বিশেষত্ব আছে। সূরা ইয়াসিন বিশেষের সাথে পড়লে আল্লাহ আমাদের মনোকামনা পূরণ করবে। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে নানা প্রয়োজন মেটানোর জন্য সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ওয়া সাল্লাম যখন বিপদে পড়তেন তখন সূরা ইয়াসিনের এই আয়াতটি পাঠ করতেন। আর এই আয়াতটি পাঠ করার কারণে আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম কি সকল বিপদ থেকে রক্ষা করতেন।আয়াতটি হচ্ছে সূরা ইয়াসিনের ৯ নম্বর আয়াত।
সূরা ইয়াসিন ২২ নম্বর পারার ১৯ নম্বর পৃষ্ঠার ১৪/১৫ লাইন ৯ নম্বর আয়াতটি হচ্ছে" ওয়াজ আলনা মিম্মা বাইনাআইদিহিম সদ্দান ওয়া মিন খলফিহিম সাদ্দান ফাবসিনহা হুম ফাহুম লাইবসিরুন" আমরা যদি কখনো কঠিন বিপদে পরি তাহলে আমরা যদি এই আয়াতটি পাঠ করি তাহলে আল্লাহ আমাদের কঠিন বিপদ থেকে আমাদের গায়েবি ভাবে আল্লাহতালা আমাদের সাহায্য করবেন ইনশআল্লাহ।
সূরা ইয়াসিন এর ফজিলত
হয়তো অনেকেই জানে না সূরা ইয়াসিনের ফজিলত কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সূরা ইয়াসিনকে বলা হয় পবিত্র কোরআনের হৃদয়। সূরা ইয়াসিন এর ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে অনেক বর্ণনা রয়েছে যা অনেকেই জানেনা। সুরা ইয়াসিন কোরানের রুহ বা হৃদপিণ্ড। যে ব্যক্তি আল্লাহ পরকালে কল্যাণ লাভের জন্য সূরা ইয়াসিন পাঠ করবে তার জন্য রয়েছে মাগফিরাত বা ক্ষমা। সূরা ইয়াসিন মানুষকে পরকালে প্রস্তুতির দিকে আহবান করে। সূরা ইয়াসিন অবৈধ বাসনা ও হারাম কাজ থেকে বিরত রাখে।
দৈনন্দিন জীবনে সূরা ইয়াসিন এর ফজিলত আমাদের জীবনে বড় ভূমিকা পালন করে। অনেকে আমরা এই বিষয়গুলো জানিনা, অনেকে সূরা ইয়াসিন এর ফজিলত বিশ্বাস করে না।এগুলো সম্পর্কে জানার পরেও অনেকে এগুলো মানে না। সূরা ইয়াসিন নিয়মিত আমল কারীর প্রতি থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি। আর আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনকারীর কোন গুনাহ থাকে না । সে দিক থেকে পরকালীন কল্যাণের জন্য সূরা ইয়াসিন এবং তার ফজিলত বুঝে পড়া খুবই জরুরী।
সূরা ইয়াসিন পাঠের মাধ্যমে আমরা নানা গুনাহ থেকে বিরত থাকতে পারি। দুনিয়ার জীবনে সূরা ইয়াসিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী। যদি কোন ব্যক্তি অভাব অনটনের সময় সূরা ইয়াসিন পাঠ করে তাহলে তার অভাব দূর হয়ে যায় সংসারে শান্তি আসে এবং রিজিকে বরকত হয়। কোন ব্যক্তি যদি সকালে সূরা ইয়াসিন পাঠ করে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সুখে স্বস্তিতে থাকব। যদি কোন মুসলমানের মৃত্যুর সময় হয় আর সে সময় তার পাশে কেউ সূরা ইয়াসিন পাঠ করে তবে বেহেস্ত থেকে রেদওয়ান ফেরেশতা জান্নাতে সুসংবাদ না দেয়া পর্যন্ত রুহ কবজকারি ফেরেশতায় ওই ব্যক্তির রুহু কবজ করেন না ।
রুহ কবজের সঙ্গে সঙ্গে ওই ব্যক্তি অবস্থান হয় রায় এর নামক জান্নাতে। মমিন মুসলমানদের উচিত প্রতিদিন সকালে অন্তত একবার এই ছড়াটি তেলাওয়াত করা কেননা তেলাওয়াতকারীকে ইহকাল ও পরকালে ব্যাপক কল্যাণ ও শান্তি দান করা হবে। তাই বলা যায় সূরা ইয়াসিনের ফজিলত আমাদের জীবনে অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত এটা কে মানা এবং আমল করা। এবং এর সম্পর্কে আরো ভালো করে জানা বুঝা। আশা করি আমরা বুঝতে পারছি সূরা ইয়াসিনের ফজিলত আমাদের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ
সূরা ইয়াসিন ৪১ বার পড়ার ফজিলত
সুরা ইয়াসিন এমন একটি সূরা যাকে কুরআনের প্রাণ বলা হয়।সুরা ইয়াসিন এর ফজিলত , গুরুত্ব ও ,মহাত্ন্য বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না। এই সূরার ফজিলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম অসংখ্য হাদিস বলেছেন নিজে এর কিছু ফজিলত দেয়া হলোঃ
"রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন সুরা ইয়াসিন হচ্ছে কোরআনের হৃদপিণ্ড বা হৃদয়"
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম আরো বলেছেনঃ" যে ব্যক্তি সূরা ইয়াসিন একবার পাঠ করবে আল্লাহ তা'আলা তাকে পুরো কোরান পড়ার সমান সওয়াব দান করবেন" "সুবহানাল্লাহ"
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেছেনঃ "সূরা ইয়াসিন হচ্ছে গুনাহ মাফের সূরা"
সানান অববি দাউদ এর একটি হাদিসে বলা হয়েছেঃ" যারা মৃত্যুবরণ করেছে তাদের ওপর ইয়াসিন পাঠ করো।
হযরত আবু জর (রাঃ) এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ মৃত্যু পথযাত্রী ব্যক্তির কাছে সুরা ইয়াসিন পাঠলে তার মৃত্যুর যন্ত্রণা সহজ হয়ে যায়।
হযরত আতাবিন আবি রাবাহ (রাঃ) এবং হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ "যে ব্যক্তি দিনের বেলায় সূরা ইয়াসিন তেলাওয়াত করবে আল্লাহ তা'আলা তাঁর হাজত পূরণ করে দিবে"(শুনানে দারেমিঃ৩৪৬১)
হযরত আব্দুল ইবনে জুবায়ের রাঃ বলেন" যে ব্যক্তি অভাব অনাটনের সময় সুরা ইয়াসিন পাঠ করবে আল্লাহ তা'আলা তাঁর অভাব দূর করে দিবেন এবং সংসারে শান্তি এবং রিজিক বরকত লাভ করবে"
তাছাড়া পবিত্র কুরআনে সুরা ইয়াসিন আরও অনেক ফজিলত রয়েছে। সেজন্য আমাদের নিয়মিত সূরা ইয়াসিন পাঠ করা জরুরী।
লেখকের শেষকথাঃসূরা ইয়াসিন ৪১ বার পড়ার ফজিলত - সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন।
আজকে আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি সুরা ইয়াসিন ৪১ বার পাঠের ফজিলত এবং সূরা ইয়াসিনের গোপন আয়াত সম্পর্কে। আপনারা যারা এ বিষয়ে জানতেন না হয়তো আজকের আর্টিকেলটি পরে আপনারা উপকৃত হবেন। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের উপকার হয় তাহলে আমাদের সার্থকতা। আর আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন আর আপনার বন্ধু-বান্ধবের মাঝে আজকের আর্টিকেলটি শেয়ার করবেন এবং তাদের পড়ার সুযোগ করে দিবেন "ধন্যবাদ"
তৌহিদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url